সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
প্রশিকার আয়োজন বাংলাদেশ ভারত সম্প্রীতির বন্ধন উৎসবে আমরা

প্রশিকার আয়োজন বাংলাদেশ ভারত সম্প্রীতির বন্ধন উৎসবে আমরা

পর্ব ১

নুর এমডি চৌধুরী।।

রোকেয়া ইসলাম আপার নিমন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বেলা এক টা থেকে সমবেত হতে থাকেন ঢাকার শ্রদ্ধেয়  কবিগণ কল্যাণপুর সকাল-সন্ধ্যা এসিবাস কাউন্টারে। পারভীন শাহনাজ শাহান আরা জাকির হাসিদা মুন  নিলুফা জামান  মামুনুর রশীদ মীর নাসিমুল ইসলাম  তাহমিনা কোরাইশী নাহার আহমেদ নাহার ফরিদ খান দিলারা মেসবাহসহ অনেকের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে সকাল সন্ধ্যা বাস কাউন্টার রোম। মীর নাসিমুল ইসলাম  বড় ভায়রার তত্ত্বাবধানে কাউন্টার কতৃপক্ষ  পরপর দু’বার চা কফির আপ্যায়ন করেন। পরিশেষে রোকেয়া আপার আগমন ঘটলে শুরু হয় ফটোসেশান।

আমরা মুলত অপেক্ষা করছি আমাদের অতিথিদের জন্য। উনাদেরকে আনতে বি আর টি সি  এসি বাস পাঠানো হয়েছে হোটেল  মেরিনায়
উনাদের নিয়ে এলে আমরা তাদের সহযাত্রী হবো। খবর এলো ভারত থেকে আগত ড. দেবব্রত দেবরায় সহ তার ২৪ সদস্য বিশিষ্ট টিম নিয়ে গাড়ি এসে পড়েছে।

আমরা দ্রুত কাউন্টার ত্যাগ করি এবং গাড়িতে  উঠে পড়ি এবং সবাই খোশ আমেজে অতিথি কবি বন্ধুদের সাথে পরিচিত হয়ে নেই।

গল্পে গল্পে অল্প সময়েই গাড়িটি নবীনগর স্মৃতিসৌধে এসে পৌঁছে। আমরা উৎফুল্লে সবাই গাড়ি থেকে নেমে অতিথি কবি বন্ধুদের সহিত মিলিত হয়ে শহীদদের প্রতি পুস্প অর্পন করি। এক মিনিট নিরবে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময়কে স্মরণ করতে থাকি।

শহীদদের প্রতি পুস্প অর্পন শেষে পুনরায় গাড়িতে উঠে পড়ি সবাই। গন্তব্য প্রশিকার মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র কতৃক আয়োজিত বাংলাদেশ ভারত সম্প্রীতির উৎসব অনুষ্ঠান কৈট্টা মানিকগঞ্জে।

গাড়িতে বসে শুনছিলাম অতিথি বন্ধুদের আলাপচারিতা। প্রশিকা সম্পর্কে জানার তীব্র কৌতুহল। মাঝে মাঝে প্রশ্ন করছেন কেউ কেউ প্রশিকার কাজ কি দাদা: বলছি দারিদ্র্য বিমোচন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন নারীর ক্ষমতায়ন সামাজিক বনায়ন মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ যতটুকু জানি বলছি ।
কেউ বলছে এটা কবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে: সময়টা বলতে পারিনি তবে এটা বলেছি স্বাধীনতার পরপরই হবে ১৯৭৫ কি ৭৬ সালে গড়া প্রতিষ্ঠানটি

কথা বলতে বলতে হঠাৎ গাড়িটি ইউ টার্ণ নিলে হতভম্ব হয়ে পড়ি। কেউ বলছে গন্তব্য ছেড়ে চলে এসেছি অনেকদূর কেউ বলছে উল্টো পথে এসেছি কেউ আবার বলছে এসে পড়েছি।

হ্যা, এসে পড়েছি এটাই সত্যি।  তবে মেইন রোড় থেকে একটু হাতের বামদিকে যেতে হবে। দু মিনিটের মাথায় গাড়িটি এমন এক জায়গায়টিতে নিয়ে এলো যেখানে সবুজ বৃক্ষ সতেজ পাতা নিয়ে যেন আকাশ ছুয়েছে। খেলার মাঠ সবুজ ঘাসে টলমল করছে। পুরোনো অসংখ্য স্থাপনা। প্রশিকার কর্মীরা রজনীগন্ধা নিয়ে আমাদের অপেক্ষায় ছিল,  তাদের আনন্দময় মুখ আমাদের আন্তরিক আমন্ত্রণ জানায়। আমরা ছড়িয়ে পড়ি অঙ্গন জুড়ে।
লেকের ধার সারি সারি বৃক্ষ। অডিটোরিয়াম অফিস আপ্যায়ন ঘর। অফিসের লোকজন তাদের দেখে মনেই হয়না এটা একটা কর্মক্ষেত্র। সবার মুখে হাসিখুশি।  একদল মাটি খুড়ছে গাছ রোপনের। রজনীগন্ধা হাতে নিয়ে হাঁটছি সবুজ পথ দিয়ে

সামনে আছেন আমাদের কবি ও কথাসাহিত্যিক  মানবিক মনের অধিকারিণী  প্রশিকার স্বনামধণ্য চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলাম । হাঁটছি হাঁটছি সবাই সারিবদ্ধভাবে  শীতল হাওয়া আর সবুজ শ্যামল বৃক্ষ নীরব নির্জনতায় ছেয়ে গেছে প্রকৃতি অপরুপে। শান্তিতে প্রাণটা আন্দোলিত হয়ে উঠছে যেন।  মনে প্রশ্ন জাগে, একটা এনজিও প্রতিষ্ঠানও এমন হতে পারে আমার পঞ্চাশ বছর জীবনে তা একবারও ভাবতে পারিনি। কত এনজিও দেখেছি মানুষের উন্নয়নের  নাম করে মানুষের কেড়ে নিয়েছে সব। তবে  প্রশিকা সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা ছিলো বেশ আগে থেকেই যতটা ছিলো ততটা বিশ্বাসযোগ্য ছিলোনা যা স্বশরীরে উপস্থিত থেকে বুঝতে পারলাম আজ। জানতে পারলাম এখানকার আত্মনিয়োগকারী কিছু মানুষের সাথে কথা বলে।
কাজের কোন চাপ নেই। যে যে যার যার মত করে নিজের দায়িত্বটিকে বড় করে দেখে এবং নিজ থেকেই উদ্যোগী হয়ে কাজ করে। পুকুরে মাছ চাষ ক্ষেতে সবজি চাষ গাছে ফল চাষ। প্রত্যেককে দেখলে মনে হলো যেন প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রাণ।

প্রশিকার চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলাম আপার পেছনে পেছনে হাটছি হাটছি একসময় একটা পুকুরপাড়ে গাছের ছায়ায় দাঁড়ালেন তিনি। ভাবলাম তিনি হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।তবে সহজে ক্লান্ত হবার মানুষ নন,আল্লাহ যেন তাকে আজীবন এমন সুকর্মে উদ্যোমী রাখেন।
শ্রদ্ধেয় ড. দেব্রব্রত দেব রায় তার দলের সকল সদস্যকে নিয়ে রোকেয়া ইসলাম আপার চারপাশ ঘীরে দাড়ালেন প্রশিকা পরিবারের সদস্যরা এবং আগত কবিকুল
। খোলা জায়গায় দুই জনকে দেখলাম মাটি খুঁড়ছে।  একজনকে দেখলাম বৃক্ষচারা নিয়ে আসছে। বুঝলাম দেব ব্রত দেব রায় বৃক্ষরোপন করবেন।

যথারীতি তাই হলো। বৃক্ষরোপন কর্মসূচী উদ্ভোদন করলেন, প্রশিকার চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলাম এবং ভারতের স্বসনামধন্য কবি ড. দেবব্রত দেব রায়,  প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী সিরাজুল ইসলাম উপ প্রধান নির্বাহী আবদুল হাকিম উপ প্রধান নির্বাহী কামরুল হাসান কামাল।
বৃক্ষরোপনের পূর্ব মুহুর্তে তার অনুভুতির কথা ব্যক্ত করলেন বললেন, বকুলগাছ রবীন্দ্রনাথের বড় প্রিয় গাছ  গাছটি তারও অনেক প্রিয় আর এই প্রিয় গাছটি ধরেই উন্মোচিত হল ভারত বাংলাদেশ  সম্প্রীতির বন্ধন। সকলের করতালি আর একদলের গানে গানে প্রাণবন্ত হয়ে উঠলো মুহূর্তটি।

বৃক্ষরোপণ শেষ হলে দলেবলে  সামনের দিকে লেকের ধারটি দিয়ে এঁকেবেকে  রাস্তাটি ধরে ডাইনিং রুমের দিকে গেছে সেদিকে হাটতে শুরু করলেন। আমরা সবাই তার পিছে পিছে হাটতে শুরু করলাম। শান্ত পরিবেশ। অফিসে অনেক লোক কিন্তু কোন কোলাহল নেই। কিছু জিজ্ঞেস করলে সম্মানের সহিত উত্তর দিচ্ছে।

হাটতে হাটতে কয়েকটা বিশাল স্থাপনা অতিক্রম করে একটু ভিতর দিকে নিয়ে গেলেন রোকেয়া আপা। এখানটা আরোও সুন্দর। কতগুলো গাছ বিশাল স্থাপনার ছাদ ছুয়ে তার অপরুপ সৌন্দর্য নিয়ে দাড়িয়ে আছে।   সাথে একটা গাব গাছ ঝোকায় ঝোকায় গাব ধরে পেকে আছে। ভারতের এক অতিথি বন্ধু জিজ্ঞেস করলেন দাদা এটা কি বকুলের গাছ। আমি উত্তর দেওয়ার আগেই আরেক অতিথি বন্ধু বলে দিলেন আরে না দেখিস না গাব ধরে আছে। উভয়েই একটু মৃদু করে হাসলাম।
(চলবে)

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD